আজ শনিবার, ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বগুড়ায় আসছেন হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ

বগুড়ায় আসছেন

বগুড়ায় আসছেন
এম নজরুল ইসলাম, বগুড়া:
২৪ মার্চ ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করতে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি। এউপলক্ষে সারাদেশের ন্যায় বগুড়ায় রংপুর ও রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয় সভা করবে জাতীয় পার্টি। শনিবার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টায় বগুড়ার বনানী মোড়ে পর্যটন মোটেল অডিটরিয়ামে এ সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। সভাপতিত্ব করবেন দলটির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি। সমন্বয় সভায় রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মহানগর, জেলা, উপজেলা ও পৌর জাপার প্রত্যেক কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত হবেন বলে জানিয়েছেন জাপার যুগ্ম মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ নুরুল ইসলাম ওমর এমপি। সমন্বয় সভায় দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আগমন ও দুটি বিভাগের সমন্বয় সভাকে সামনে রেখে বগুড়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। জেলাসহ প্রতিটি উপজেলা-পৌর ও তৃনমূলের ইউনিয়ন-ওয়ার্ড কমিটির প্রস্তুতিসভা চোখে পড়ারমত। নেতাকর্মীরা বেশ সক্রিয় ভাবেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সর্বাত্বক প্রস্তুতি শুরু করেছে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্র্টি। ভোটের রাজনীতিতে দলের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে বেশ আটঘাট বেঁধেই মাঠে নেমেছে দলটি। এরই অংশ হিসেবে ২৪ মার্চ ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করতে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এবারের মহাসমাবেশ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা।
তাদের মতে, নির্বাচনের বছরে এই মহাসমাবেশের মধ্যদিয়ে জাতীয় পার্টির শক্তি প্রদর্শনই নয়, আরও বেশ কিছু কারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। মহাসমাবেশ থেকে এককভাবে নির্বাচনের নির্দেশনা, ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়া, এমনকি মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার সুস্পষ্ট ঘোষণা দিতে পারেন পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। মহাসমাবেশ থেকে নির্বাচনী রোডম্যাপও ঘোষণা করবেন তিনি। নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে জাতীয় পার্টি কী করবে- এই রোডম্যাপে সে ঘোষণাও থাকবে। ভোটের প্রস্তুতি হিসেবে আগে দলের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার কাজে মনোনিবেশ করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বলেন, আমাদের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য- তা হচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভালো ফল অর্জনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নেয়া। যেহেতু নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই, দেখতে দেখতে সময় ঘনিয়ে এসেছে, তাই আমরা নির্বাচনের সর্বাত্বক প্রস্তুতি শুরু করেছি। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই ২৪ মার্চ ঢাকায় মহাসমাবেশ। এটি হবে স্মরণকালের বৃহত্তম সমাবেশ।
বগুড়ায় রংপুর ও রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয় সভা সম্পর্কে জানতে চাইলে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নাটোর জেলা জাপার সভাপতি মজিবুর রহমান সেন্টু বলেন, ঢাকায় মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের সমন্বয় এবং প্রস্তুতি সভা বগুড়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভায় দুটি বিভাগের মহানগর, জেলা-উপজেলা ও পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিত হবেন শতস্ফুর্তভাবেই। সভায় পল্লীবন্ধু এরশাদ উপস্থিত নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক দিকনির্দেশনা দেবেন।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয় যুবসংহতির রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন মোস্তফা কামাল ফারুক বলেন, ঢাকায় মহাসমাবেশে জনতার ঢল নামবে। তৃনমূলে বেশ সক্রিয়ভাবেই উঠান বৈঠক, প্রস্তুতিসভা, আলোচনা সভা ও সমাবেশের মাধ্যমে প্রচারণা চলানো হচ্ছে। জাতীয় পার্টি আগের যেকোন সময়ের চেয়ে শক্তিশালী।
মহাসমাবেশে ঢাকায় জনতার ঢল নামাতে তৃনমূলে মরিয়া হয়ে উঠেছে জাতীয় পার্টির অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোও।
বগুড়া জেলা জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি লুতফর রহমান সরকার স্বপন বলেন, নেতাকর্মীরা শতস্ফুর্তভাবে তৃনমূলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিনত করতে সাংগঠনিক কার্যক্রমও শক্তিশালী করা হয়েছে।
রংপুর মহানগর-জেলার জাপার সমন্বয়ে মহাসমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন রংপুর মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াছির। তিনি বলেন, দেশের মানুষ পরিবর্তনে বিশ্বাসী। তাই জাতীয় পার্টির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। রংপুর সিটি নির্বাচনে বিজয়ের পর আমরা সুন্দরগঞ্জেও বিজয় অর্জন করেছি। এই বিজয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে এবং জনগনের প্রত্যক্ষভোটে আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সরকার গঠন করবে বলেও মন্তব্য করেন জাপার এই নেতা।
নাটোর জেলা জাপার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সোহেলা রানা জানান, তিনি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন বাজার ও গ্রামগঞ্জে প্রচারণার অংশ হিসেবে লিফলেট বিতরণ এবং গনসংযোগ করছেন।